বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৮, ২০২১




রমজানকে ঘিরে এবারও আমদানি হচ্ছে নিম্নমানের খেজুর

নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিন:

রমজানকে ঘিরে বরাবরের মতো এবারও খেজুর বিক্রেতারা ভোক্তা ঠকানোর ফাঁদ পেতেছেন।তারা আমদানি করছে অস্বাস্থ্যকর ও নিম্নমানের খেজুর।পুরান ঢাকার বাদামতলী এলাকার কতিপয় অসাধু আমদানিকারক এ কাজে লিপ্ত বলে জানা গেছে।

এছাড়া গত কয়েক বছর বিক্রি না হওয়া খেজুরও বিক্রির জন্য গোডাউন থেকে বের করা হয়েছে।আর এসব খেজুর চমকপ্রদ ও স্বাদ বাড়াতে মেশানো হচ্ছে মিষ্টির সিরা ও সরিষার তেল। এদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা খুচরা পর্যায়ে কম খেজুর সরবরাহ করে তৈরি করছে কৃত্রিম সংকট। বিক্রি করছে বাড়তি দরে। ফলে রোজার আগেই খেজুরের দাম হু হু করে বাড়ছে। ভোক্তারা বাধ্য হয়ে পণ্যটি বাড়তি দরে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

গত বছর রোজায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বাদামতলীর বিভিন্ন আড়তে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নিম্নমানের খেজুর জব্দ করেন। সে সময় দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হয়। তারপরও এ বছর গোপনে অসাধুরা বেশি লাভের আশায় নিম্নমানের খেজুর এনেছে ও আনছে। পাশাপাশি বাড়িয়ে দিয়েছে দাম।

মঙ্গলবার পুরান ঢাকার ফলের আড়ত বাদামতলী সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন দেশ থেকে নিম্নমানের খেজুর আমদানি করে বস্তা ভরে থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এসব খেজুরের বস্তার গা ভেজা ও স্যাঁতসেতে। বস্তায় নেই কোনো মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ। এছাড়া এ নিম্নমানের খেজুরগুলোর স্বাদ ও চকচকা করতে মিষ্টির সিরা ও সরিষার তেল মেশানো হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা এসব খেজুর কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, রমজান উপলক্ষ্যে বাজার তদারকি ও অভিযান শুরু হয়েছে। নিত্যপণ্যের বাজার থেকে শুরু করে ফলের আড়তে অভিযান পরিচালনা করা হবে। গোপনে কেউ যদি অস্বাস্থ্যকর খেজুর আমদানি বা বিক্রি করে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি খেজুর জব্দ করে ধ্বংস করা হবে।

রমজান মাসের জন্য বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে খেজুর সরবরাহ থাকলেও বেশি মুনাফার আশায় খেজুরের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে পাইকারি ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে তারা সাধারণ মানের খেজুর পাইকারি পর্যায়ে কেজিতে ১৫০-২০০ টাকা বাড়িয়েছে। এখন খুচরা বাজারে সাধারণ মানের খেজুর কেজি ৫৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ দাম বাড়ার চিত্র সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির দৈনিক বাজার মূল্যে লক্ষ্য করা গেছে। টিসিবি বলছে, গত বছর এ সময় প্রতি কেজি সাধারণ মানের খেজুর বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকা। আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা। সেক্ষেত্রে বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজি খেজুরের দাম ৪৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়েছে।

বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে খেজুর বিক্রেতা হাবিবুল্লাহ বলেন, গত বছরের তুলনায় এবারের খেজুরের দাম বেশি। আড়তদাররা বেশি দামে খেজুর বিক্রি করছে। পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে বেশি দামে খেজুর আনতে হয় তাই আমাদেরও বেশি দামে খেজুর বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আড়তদাররা এবার সিন্ডিকেট করে খুচরা পর্যায়ে খেজুর কম ছাড়ছে। বাজারে খেজুরের সংকট দেখিয়ে দামও বাড়িয়েছে পাইকারি আড়তদাররা।

একই স্থানে খেজুর ক্রয় করতে আসা জাহিদ হোসেন বলেন, সামনে রমজান মাস। তাই খেজুরের দাম জানার জন্য দাঁড়িয়েছি। কিন্তু এবার মনে হচ্ছে গত বছরের তুলনায় দাম তুলনামূলক বেশি। প্রতি রমজান এলেই বিক্রেতারা পাল্লা দিয়ে রমজানের সবকটি পণ্যের দাম বাড়ায়। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

বাদামতলীর মেসার্স ছায়েম এন্টরপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, এবার খেজুরের দাম গত বছরের তুলনায় একটু বেশি। আড়তে এখনো বেশি পরিমাণে খেজুর ওঠেনি। সব রকমের খেজুর আসতে আরও এক সপ্তাহের মতো সময় লাগবে। আড়তে পর্যাপ্ত পরিমাণে খেজুর আসলে দাম কমতে পারে।

Spread the love
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 1 =

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর